ঢাকা ১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯:২৬ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৮, ২০২০
নিজস্ব প্রতিবেদন : দেশে ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে করোনাভাইরাস। এমতাবস্থায় করোনা মোকাবেলায় দেশব্যাপী বিভিন্ন সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ সহ বেশ কয়েকটি জেলাকে একপ্রকার লকডাউন করে রাখা হয়েছে। যাতে ব্যাপকারে ছড়িয়ে পড়তে না পারে মরনব্যাধি করোনাভাইরাস।
বিশেষজ্ঞরা গণপরিবহন ও জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শও দিচ্ছেন প্রতিনিয়ত। কিন্তু সিলেটে এসবের বালাই নেই। দেশের প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেট একপ্রকার অরক্ষিতই হয়ে আছে। বিশেষ করে রাতে বিভিন্ন জেলা থেকে শাকসবজী ও কাচামালবাহী ট্রাক বিনা বাধায় শহরে প্রবেশ করছে। ট্রাক ও ট্রাকের শ্রমিকরা অসচেতনভাবে যদি করোনা ভাইরাসের বাহক হিসেবে সিলেটকে হুমকির মুখে ফেলেন-এর ফলাফল ভাবতে গেলেই আঁতকে উঠতে হয়। এ নিয়ে উৎকুণ্ঠিত সিলেটের সুধীজনেরা।
সরেজমিনে মঙ্গলবার মধ্যরাতে সিলেটের সব্জী বাজার নামে খ্যাত চালিবন্দরের ট্রেড সেন্টার ঘুরে দেখা যায়, সব্জির আড়তের মালিক ও পরিবহনের মালিকরা ভাইরাসটি প্রতিরোধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বরং তারা উদাসীন। বাজারে ক্রেতা সমাগম কম থাকলেও পন্য স্বাভাবিক ভাবেই আসছে। সারা বাজার ঘুরেও কোথাও জীবাণুনাশক স্প্রে করতে দেখা যায়নি। ফলে শ্রমিক ব্যবসায়ী ও পাইকারদের ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সচেতনতা বৃদ্ধিতে বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক কিছু লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু তা রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে যথেষ্ট ভূমিকা রাখবে না বলে মনে করছেন এলাকাবাসী। তারা বলছেন, করোনা ভাইরাস আক্রান্ত কারও হাঁচি বা কাশিতে থাকা জীবাণু শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে। তাছাড়া আক্রান্ত ব্যক্তির স্পর্শ লেগেছে এমন কোনও বস্তু স্পর্শের মাধ্যমেও ভাইরাসটি সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাছাড়া আক্রান্ত ব্যক্তির দুই মিটারের মধ্যে থাকা অন্য ব্যক্তিকেও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে।
মধ্যরাতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কেউই সরকারী নির্দেশনা মানছে না। অনেক ব্যবসায়ী সরকারী নির্দেশনার বিষয়ে জানেই না। এছাড়া বাজারের ব্যবহৃত পাবলিক টয়লেটগুলোতেও জীবাণুনাশক কোনও স্যানিটাইজার দেওয়া হচ্ছে না। জানতে চাইলে আশরাফ উদ্দিন নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, প্রতিদিন অসংখ্য পাইকার ও শ্রমিকদের সাথে উঠাবসা করি। কয়জনকে আমরা সচেতন করবো। কতবার দোকান পরিষ্কার করবো? সরকার বা সিটি কর্পোরেশন তো আমাদের এমন বরাদ্দ দেয় না। তাছাড়া হ্যান্ড স্যানিটাইজারও বাজারে পাওয়া যায় না।
আসাদ মিয়া নামের চালিবন্দর এলাকার এক বাসিন্দা জানান, আমরা শুধু মিডিয়ায় সরকারের মন্ত্রী ও পরিবহন মালিকদের বিভিন্ন ঘোষণা দেখতে পাই। কিন্তু সেসব বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। সরকার কতৃক যেসব ঘোষণা দেয়া হয়েছে, কোনও ব্যবসায়ীই তা পালন করেন না। কতৃপক্ষ ও উদাসীন।
সিলেটের সুধীজনরা বলছেন, পরিবহন ব্যবহার সংক্রান্ত বিশেষ সতর্কতা প্রচারের পাশাপাশি শাকসব্জী বহনকারী পরিবহনকে জীবাণুমুক্ত রাখতে জরুরি ভিত্তিতে বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে। অন্য জেলা থেকে আগত ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের জন্য সিলেটের প্রবেশ পথে থার্মাল স্ক্যানার বসিয়ে জরুরি ভিত্তিতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by Yellow Host