ঢাকা ১৩ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৩:১০ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৭, ২০২৫
কুলাউড়া প্রতিনিধি
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। তিনি মোঃ সালাহ উদ্দিন নামে এক ব্যবসায়ী ও কানাডা ফেরত প্রবাসীর নিকট ওই চাঁদা দাবি করেন। এ নিয়ে উপজেলা জুড়ে তীব্র সমালোচনার ঝড় বইছে। এমনকি বিএনপি মহলেও এর নিন্দা ও প্রতিবাদ হচ্ছে।
জানা যায়, কুলাউড়া পৌর সভার অন্তর্গত দক্ষিণ বাজারে অবস্থিত ‘গোল্ডেন ফার্নিচার মার্ট’ এর স্বত্বাধিকারী মোঃ সালাহ উদ্দিন গত দুই বছর থেকে কানাডায় বসবাস করছেন। দেশে সনামের সাথে ব্যবসা পরিচালনা করা অবস্থায় কানাডার ভিসা হয়ে গেলে তিনি ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর কানাডায় পাড়ি জমান। এরপর সেখান থেকে দেশের রেমিট্যান্সে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। সেইসাথে দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা করতে সেখানকার প্রবাসী বাঙালিদেরও তিনি রেমিট্যান্স পাঠাতে উদ্বুব্ধ করেন। তার হাত ধরে গত দুই বছরে দেশে উল্লেখযোগ্য কানাডিয়ান রেমিট্যান্স এসেছে বলেও জানা গেছে।
সালাহ উদ্দিন জানান, প্রবাসে থাকাস্থায় তার পরিবারের নিকট বার বার ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন কুলাউড়া পৌর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলার পূর্ব মনসুর গ্রামের মৃত কাফিল উদ্দিন আহমদের ছেলে কমর উদ্দিন আহমদ কমরু(৪৮) এবং সিলেট জেলা বিএনপির সদস্য ও পূর্ব মনসুর গ্রামের মৃত তৈয়বুর রহমানের ছেলে অ্যাডভোকেট এএনএম আবেদ রাজা। টাকা দিতে অপারগতা জানালে তারা বিভিন্ন হুমকি ধমকিসহ চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। তাদের এহেন অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে গত ১১ জুন’২৫ মৃত্যু বরণ করেন সালাহ উদ্দিনের পিতা আব্দুল জলিল। রেলওয়েতে সরকারি চাকুরীবি পিতার মৃত্যুর পর একমাত্র বোনকে নিয়ে একা হয়ে পড়েন তিনি। এমনকি দেশে আসার পর হাজার চেষ্টা করেও ওই চাঁদাবাজদের কারণে পিতার পেনশনের টাকা উঠাতে পারেননি। তাদেরকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দিলে টাকা উঠানো যাবে, নয়তো এক টাকাও তুলতে দিবে না বলে হুমকি প্রদান করে ওই বিএনপি নেতা কমরু ও আবেদ।
ভুক্ত প্রবাসী জানান, টানা দুই বছর অতিবাহিত হওয়ার পর নাড়ির টানে তিনি গত ২৫ জুলাই’২৫ দেশে আসেন। তার দেশে ফেরার খবর পেয়ে এই দুই দিনে স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতি নেতৃবৃন্দ প্রতিনিয়ত দেখা করতে আসেন। একইভাবে ২৭ জুলাই’২৫ দেখা করতে আসেন কুলাউড়া পৌর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কমর উদ্দিন আহমদ কমরু এবং সিলেট জেলা বিএনপির সদস্য অ্যাডভোকেট এএনএম আবেদ রাজা। এসময় তারা তার নিকট নগদ ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
কেন চাঁদা দিতে হবে এমন প্রশ্নের জবাবে নাকি ওই দুই নেতা বলেন, সামনে জাতীয় নির্বাচন, দলীয় ফান্ডে প্রচুর টাকার প্রয়োজন। এমতাবস্থায় তার মতো একজন ব্যবসায়ী ও প্রবাসীর নিকট দলীয় ফান্ডের জন্য টাকা চাইবেন নাতো কি ফকিরের কাছে চাইবেন? এমনকি নগদ দিতে না পারলে তিন দিনের মধ্যে চাঁদার ১০ লাখ টাকা পরিশোধের তাগিদ দিয়ে চলে যান।
এ বিষয়ে কোনো মামলা বা জিডি করবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে সালাহ উদ্দিন বলেন, আমি প্রবাসী মানুষ। আমি নিরুপায়। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভঙ্গুর। এমতাবস্থায় আইনের আশ্রয় নিলে আমার জন্য ‘হিতে বিপরীত’ হতে পারে। ভাবছি তাদেরকে টাকা দিয়ে দিবো, নয়তো তারা আমাকে কিংবা আমার পরিবারের বড় ধরনের ক্ষতি করে ফেলবে।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by Yellow Host