গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রেশ কাটতেনা কাটতেই চলতি বছরের ফেব্র“য়ারি মাসে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ও মার্চে ভোট গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এমন ঘোষণার পর থেকেই দেশের অন্যান্য উপজেলার ন্যায় গোলাপগঞ্জের সর্বত্র আলোচনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন নবীন ও প্রবীণ ভোটাররা।

এদিকে নিজ নিজ বলয়ে ভোটার টানতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। ইতোমধ্যে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজেদের প্রার্থীতার কথা তুলে ধরতে শুরু করেছেন। প্রার্থীদের ফেসবুক ওয়ালে ঠাই পাচ্ছে বিভিন্ন উন্নয়ন ও পরিবর্তনমূলক স্লোগান সম্বলিত পোস্টার (ছবি)। আর এসব ছবিতে নিজেদের সম্মতির কথা কমেন্টেস-এর মাধ্যমে প্রকাশ করছেন ভোটাররা। তারা প্রার্থীদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে বলছেন। কেউ কেউ সম্ভাব্য প্রার্থীদের

সাথে থাকার কথা বলছেন আবার অনেকেই প্রার্থীদের অতীতের উন্নয়ন কাজ বা সামাজিক অঙ্গনে প্রশংসনীয় বিভিন্ন ফিরিস্ত তুলে ধরছেন। সব মিলিয়ে উপজেলার সর্বত্র এখন অনলাইন ও অফলাইনে সমানতালে বইছে আলোচনার ঝড়।

এবার প্রথম বারের মত দলীয় প্রতীকে উপজেলা নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। যা নিয়ে রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের মধ্যে বেশ আগ্রহ ল্য করা যাচ্ছে। প্রার্থীরা কেন্দ্র থেকে দলীয় মনোনয়ন নিতে দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে দলের শীর্ষ নেতাদের সাথে যোগাযোগ ও শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা। প্রায় সাড়ে তিন ল জনসংখ্যা অধ্যুষিত ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত গোলাপগঞ্জ উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ২ল ২২ হাজার ৫শত জন।

চেয়ারম্যান পদে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন, আওয়ামী লীগ থেকে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান হুমায়ূন ইসলাম কামাল, গোলাপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লুৎফুর রহমান, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য সাংবাদিক আব্দুল লতিফ নতুন, আব্দুল ওয়াহাব জোয়ারদার মসুফ, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের কার্য নির্বাহী সদস্য সৈয়দ মিসবাহ উদ্দিন, গোলাপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আকবর আলী ফখর, সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনসুর আহমদ, সাবেক উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও সিলেট মহানগর যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজিরা বেগম শীলা।

এদিকে বিএনপি প্রার্থীদের মধ্যে দলীয় মনোনয়ন পেতে মাঠে তৎপর রয়েছেন, জেলা বিএনপির উপদেষ্টা এডভোকেট মাওলানা রশিদ আহমদ, উপজেলা বিএনপির সভাপতি লণাবন্দ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নছিরুল হক শাহিন, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ভাদেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিলাল উদ্দিন, গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নোমান উদ্দিন মুরাদ ও বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান উপজেলা জামায়াতের আমীর হাফিজ নজমুল ইসলাম।

এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে যারা বেশ আলোচনায় রয়েছেন তারা হলেন, গোলাপগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি আব্দুল আহাদ, বাদেপাশা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রেহান উদ্দিন রায়হান, আওয়ামী লীগ নেতা রুমেল সিরাজ, পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিপন, সোহেল বক্স।

এদিকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক রোকিয়া আক্তার চৌধুরী, স্বতন্ত্র প্রার্থী মুনিয়া ইসলাম মনি’র নাম শোনা যাচ্ছে।

এ বিষয়ে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ুন ইসলাম কামাল জানান, বিগত নির্বাচনে আমি উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ছিলাম। এর আগে উপজেলা পরিষদের প্রথম ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে বিজয়ী হয়েছিলাম। জনগণের ভালবাসা নিয়ে এবার আমি নৌকার মাঝি হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে প্রত্যাশী। আশা করছি দলও আমায় মূল্যায়ন করবে।

জেলা বিএনপির উপদেষ্টা এডভোকেট মাওলানা রশিদ আহমদ জানান, দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে আমি ধানের শীষের মনোনয়ন চাইবো। বিগত দিনেও আমি এই উপজেলায় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি। এবার দলীয় সিদ্ধান্তের অপোয় রয়েছি। দল নির্বাচনে আসলে বিজয়ে আশাবাদী।

উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী গোলাপগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি আব্দুল আহাদ বলেন, দীর্ঘ দুই যুগ ধরে সাংবাদিকতার মহান পেশায় নিয়োজিত আছি। বিভিন্ন সময় সমাজের অন্যায়, অবিচার সমাজের কাছে তুলে ধরেছি। সমাজের দুঃখী অসহায় মানুষের কল্যাণে কাজ করতে নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন বলে জানান তিনি।