আহমদ আল কবির, জকিগঞ্জ
জকিগঞ্জের পাঠানচকে একটি কালভার্ট নির্মাণকে কেন্দ্র করে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হাসান আহমদের বিরুদ্ধে আনিত চাঁদাবাজির অভিযোগটি মিথ্যে বলে প্রমাণিত হয়েছে। বরং, তাকে নিয়ে অনলাইন মাধ্যমে এমন অপপ্রচার চালানোই সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার বিএনপি নেতা সাব্বির আহমদের প্রতি নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় জনতা। তারা বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় ঠিকাদার সাব্বির যে বক্তব্য দিয়েছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তিনি হাসান আহমদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে ভিডিওতে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দিয়েছেন। মূলত, তিনি সম্মানি ব্যক্তি হাসান আহমদকে হেয় প্রতিপন্ন করতে এমন অপপ্রচার চালিয়েছেন, আমরা তার নিন্দা জানাই।
জানা যায়, জকিগঞ্জের সুলতানপুর ইউনিয়নের পাঠানচক গ্রামে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের একটি কালভার্ট নির্মাণকে কেন্দ্র করে ব্রীজের পাশের জমির দুই মালিক পক্ষের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। ব্রিজের পাশের জমির মালিকের অভিযোগ, ‘একটি কুচক্রী মহল আমার ক্ষতিসাধনের লক্ষ্যে নির্ধারিত স্থানে কালভার্ট না বসিয়ে আমার জায়গার মধ্যে বসানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আমার বাড়িতে লোকজন না থাকায় একটি মহল সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে নিয়ে এই অপচেষ্টা চালায়। এটা নিয়ে বিরোধ দেখা দিলে ২ দিন কাজ বন্ধ থাকে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফসানা তাসলিম তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আতাউর রহমান ও শিক্ষা কর্মকর্তা এমদাদুল হককে নিয়ে সরজমিন পরিদর্শন করেন।’
স্থানীয়রা জানান, নির্মাণাধীন কালভার্টের পাশের জমির মালিকের জমির কিছু অংশ ওই কালভার্টের নিচে পড়ে যায়। পরে তার পক্ষ থেকে আপত্তি ওঠে। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রজেক্ট অফিসারকে নিয়ে সমাধান করে দেন। পরে বিষয়টি নিয়ে জমির মালিক পক্ষের প্রতিনিধি সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রদল নেতা তানভীর আহমদ উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হাসান আহমদকে অবগত করেন। তিনি ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি সম্পর্কে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে অবগত করলে তার পরামর্শে দুই দিন কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। এর প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও এলাকাবাসীর মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।
সংশ্লিষ্ট কাজের ঠিকাদার বিএনপি নেতা সাব্বির আহমদ জানান, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হাসান আহমদ আমার নির্মাণ শ্রমিকদের বাধা দেওয়ার কারনে দুই দিন কাজ বন্ধ রাখি। পরে এলাকাবাসীর অনুরোধে আবারো কাজ শুরু করি। সোশ্যাল মিডিয়ায় দেয়া ভিডিওতে চাঁদাবাজির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।
এ প্রসঙ্গে পাঠানচক গ্রামের বাসিন্দা মুছলেহ উদ্দিন খান বলেন, ওই ঠিকাদার একজন নোংরা মানসিকতার লোক। এলাকায় বিভ্রান্তি সৃষ্টির লক্ষ্যে একজন সম্মানী মানুষের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলছেন। তার এমন অভিযোগ ছড়ানোর নিন্দা জানাই।
জকিগঞ্জ সদর ইউপির সাবেক সদস্য আজিজুর রহমান কালন ও সুলতানপুর ইউপি সদস্য শামীম আহমদ খান জানান, কালভার্টের পাশের জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মিমাংসার জন্য পিআইওর পরাশর্শে দুই দিন কাজ বন্ধ ছিল। চাঁদাবাজির অভিযোগ মিথ্যা। যার সম্পর্কে এই অভিযোগ তোলা হচ্ছে তিনি একজন সম্মানি মানুষ। আমরা এই মিথ্যা অভিযোগের তীব্র নিন্দা জানাই।
উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন সেলিম ও উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক, এইচ এম হাসানের সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে উনারা জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি একটি নোংরা প্রকৃতির, এই মিথ্যা অভিযোগের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হাসান আহমদ বলেন, ছাত্রদল নেতা তানভীর আহমদের জমির উপর দিয়ে কালভার্ট নির্মাণের অভিযোগ শুনে আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার সাথে ফোনে কথা বলি। তিনি ঢাকায় অবস্থান করার কারনে আমাকে জানান জকিগঞ্জ এসে বিষয়টি নিয়ে বসবেন। তার নির্দেশেই কাজ বন্ধ ছিল। ঠিকাদার সাব্বির আহমদ হিংসার বশবর্তী হয়ে অনলাইনে আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করছেন। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফসানা তাসলিম বলেন, পাঠানচকের কালভার্টের কাজ শুরুর আগে ও পরে আমি পিআইওকে নিয়ে একাধিকবার পরিদর্শন করেছি। কাজের মান বা অন্যান্য বিষয়ে কেউ কখনো কোনো অভিযোগ করেনি। গতকালকে অনলাইনে একটি ডিডিও দেখে আজ আবারো পরিদর্শন করেছি। এলাকাবাসী সহ কেউ কোন চাঁদাবাজির অভিযোগ আমার কাছে করেনি। ব্রীজের স্থানের জায়গা নিয়ে একটি অভিযোগ আছে। এটা আমরা সকলে বসে যথাযথভাবে সমাধান করে দিবো।