ঢাকা ৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৪:৫০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৬, ২০১৯
গোলাপগঞ্জ সংবাদদাতা
গোলাপগঞ্জের কয়েক মাসের জন্য হলেও কিছুটা কষ্ট লাগব হয়েছে দু’পারের হাজার হাজার মানুষের। এই প্রথম বইটিকর খেয়াঘাট দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে বাশের তৈরি সাঁকো। এই খেয়াঘাট দিয়ে যাত্রী পারাপারের পাশাপাশি সুবিধা পাচ্ছেন মোটর ও বাই সাইকেল আরোহীরা। তাদের চোখে দেখা গিয়েছে আনন্দের ছাপ। ইতিমধ্যে অনেকেই তাদের উৎফুল্লের বার্তা জানিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।
গোলাপগঞ্জ থেকে মোটর সাইকেল নিয়ে বাঘা ইউনিয়নের যেকোন গ্রামে যেতে হলে ঘুরতে হয় প্রায় ১০-১২ কিলোমিটার। যাত্রী পারাপারের সুবিধা দিতে পেরে আনন্দিত ঘাটের মাঝি বিজয় দাস। যাত্রীদের যাতায়াতও বেড়েছে আগের তুলনায়। সহায়তার হাত প্রসারিত করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। সব মিলিয়ে এমন কাজে প্রশংসিত হয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পৌরসভার শেষ প্রান্ত ফুলবাড়ী ইউনিয়নের অবস্থিত বইটিকর খেয়াঘাট। এ ঘাট দিয়ে প্রতিদিন বাঘা ইউনিয়নের লালনগর, রুস্তমপুর, জোরালনগর, বাঘা বটরতল বাজার, উত্তর বাঘা, তুড়–কগাঁও, কালাকোনা, দৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দারা যাতায়াত করেন। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পথচারীদের পদচারণায় মুখরিত থাকে এ ঘাট।
বইটিকর ঘাটের ইজারাদার গোলাপগঞ্জ বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হাজী আব্দুল কাদির। তিনি প্রায় ১২ বছর থেকে এ ঘাটের ইজারাদার সূত্রে মালিক রয়েছেন। রাতে যাত্রী পারাপারের সুবিধার জন্য করা হয়েছে সৌর বিদ্যুৎ সংযোজনে লাইটিং। সুরমা নদীর উপর বাঁশ দিয়ে সাঁকো নির্মাণ করায় অন্যান্য যে কোন সময়ের চেয়ে যাত্রী পারাপারের নিরাপত্তা ও সুবিধা বৃদ্ধি পেয়েছে বইটিকর খেয়াঘাটে।
গোলাপগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী মো. জাহেদ আহমদ জানান, জীবনের প্রথম বইটিকর খেয়াঘাট দিয়ে মোটর সাইকেল পার করতে পেরে আনন্দ উপভোগ করছি। এই প্রথম বইটিকর ঘাটে বাঁশ দিয়ে সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছে। গোলাপগঞ্জ বাজারে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকার সুবাদে সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে গভীর রাতে নদী পাড়ি দিতে হয়। সাকোঁটি নির্মাণ করায় যেমনি হয়েছে সুবিধা, তেমনি মোটর নিয়ে পারাপারে হয়েছে সহজ। তিনি নির্মাণকারী নৌকার মাঝিকে ধন্যবাদ জানান।
এ ব্যাপারে বাঘা ইউনিয়নের লালনগর গ্রামের ইউপি সদস্য বাহার উদ্দিন জানান, সুরমা ওপর পারের সব নাগরিকের একমাত্র ভরসাই নৌকা। সুরমা নদী পারাপারে তাদের আর কোন সুবিধা নেই। এবার প্রথমবারের মত বইটিকর খেয়াঘাটে বাঁশ দিয়ে সাঁকো তৈরি করায় এলাকাবাসীসহ মোটর সাইকেল আরোহীরা সুবিধা পেয়েছেন। বাঘা-গোলাপগঞ্জ সংযোগে কোন দিন ব্রীজ নির্মাণ করা হলে দু’পারের মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন হবে।
এ ব্যাপারে বইটিকর ঘাটের মাঝি বাঘা ইউপির লালনগর গ্রামের বাসিন্দা বিজয় দাস প্রতিবেদককে জানান, দীর্ঘ ১৭ বছর থেকে এ ঘাটে নৌকার মাঝি হিসেবে রয়েছি। সুরমা নদীর ঘাটের সীমা বড় থাকায় বরাবর যাত্রী পারাপারে বাড়তি কষ্ট লেগেই থাকত। পানি কমে যাওয়ার ফলে এই প্রথম বাঁশ দিয়ে সাকোঁ নির্মাণের উদ্যোগ নেই। এর আগে কখনো এই ঘাট দিয়ে মোটর সাইকেল পারাপার সম্ভব হয়নি। যেহেতু নদীর দু’পারের ব্যাপক সংখ্যক যাত্রীরা প্রতিদিন পাচঁ মাইল সুরমা ব্রীজ হয়ে দীর্ঘ জাগা ঘুরে গোলাপগঞ্জসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করেন। সবার সুবিধার কথা চিন্তা করেই সুরমা বুকে নির্মাণ করেছি বাঁশ দিয়ে সাকোঁ। এছাড়া এ ঘাট দিয়ে প্রতিদিন পারাপার শত শত শিক্ষার্থী। সাকোঁটি নির্মাণ করেছি এলাকাবাসীর সহযোগিতায়। ব্যয় হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। নিজ অর্থ ব্যয়ে সাকোঁ নির্মাণ করলেও ব্যাপক খুশি রয়েছি আমি। কারন যাত্রীদের আগের তুলনায় সুবিধা বেড়েছে। পারাপারে নিরাপত্তা বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি জানান, প্রতিদিন ঘাটের ইজারাদারকে দিতে হয় ৪৫০ টাকা। এর পরে অবশিষ্ট যা বেঁচে থাকে তা দিয়েই চলে পরিবারের আহার নিবারন। সাকোঁ নির্মাণের প্রায় দেড় মাস হয়েছে। এটি বর্ষা মৌসুমের আগ পর্যন্ত দু’মাস রাখা যাবে। সকাল ৮টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সকল শ্রেণী পেশার শত শত যাত্রী পারাপার হন এ ঘাট দিয়ে।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by Yellow Host