ঢাকা ৮ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৪:৫৯ অপরাহ্ণ, মে ২০, ২০১৯
গোলাপগঞ্জ সংবাদদাতা
গোলাপগঞ্জে ছাব্বির হোসেন নামের এক দশম শ্রেণীর মাদরাসা ছাত্রকে হাত পা বেঁধে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম হাফিজ আব্দুল কাইয়ুম। তিনি উপজেলার ভাদেশ্বর হাফিজিয়া দাখিল মাদরাসা সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
ঘটনাটি শুক্রবার (১৭ মে) রাতে ঘটে। আহত ছাব্বির হোসেনকে গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। সে উপজেলার নিজ ঢাকাদক্ষিণের বিদায়টিকর গ্রামের আব্দুল কাদিরের পুত্র। ছাব্বির তার মায়ের সাথে দীর্ঘ দিন ধরে নানা বাড়ি ভাদেশ্বরের করগাঁও উজানপাড়া গ্রামে বসবাস করে আসছে।
প্রথমে নির্যাতনের বিষয়টি ধামাচাপার চেষ্টা করা হলেও শেষ পর্যন্ত এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। (২০ মে) সোমবার সকালে ঐ ছাত্রের মামাতো ভাই রাজু আহমদ বাদী হয়ে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় একটি অভিযোগ করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (১৭ মে) ভাদেশ্বর হাফিজিয়া দাখিল মাদরাসার দশম শ্রেণীর ছাত্র ছাব্বির আহমদের সাথে তার সহপাঠীদের কথা কাটাকাটি হয়। বিষয়টি মাদরাসার সুপার হাফিজ আব্দুল কাইয়ুমের কানে পৌছা। তিনি রাতেই ছাব্বিরকে মাদরাসায় ডেকে পাঠান। তারপর দরজা বন্ধ করে এক ঘরে হাত পা বেঁধে তাকে রাতভর বেধড়ক মারপিট করে বন্দি করে রাখেন। পরদিন সকালে এ খবর ছাব্বিরের পরিবারে পৌছালে তাকে উদ্ধার করে আহত অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। বর্তমানে সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
সরেজমিনে হাসাপাতালে গিয়ে আহত ছাব্বিরের মামাতো ভাই ও মামলার বাদী রাজু আহমদের সাথে আলাপকালে তিনি জানান, ছাব্বিরের উপর অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। রাতভর তার হাত পা বেঁধে নির্যাতন করেছেন শিক্ষক আব্দুল কাইয়ুম। এমন নির্যাতনের ঘটনা মেনে নেয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। শিক্ষার্থী ভুল করলে শিক্ষরা শাসন করবেন এটাইতো নিয়ম। কিন্তু, যেভাবে শাসন করেছেন সেটা কোন অবস্থাতেই কাম্য নয়। শাসনের নামে একটা শিক্ষার্থীর উপর অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা আইনের আশ্রয় নিয়েছি। অবশ্যই আইনানুগ ভাবে এর সুষ্ঠ বিচার চাই।
বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক হাফিজ আব্দুল কাইয়ুম এর সাথে আলাপকালে তিনি ঘটনার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘ছাব্বির প্রায়ই মাদরাসার অন্যান্য ছাত্রদের সাথে ঝগড়া করে থাকে। শুক্রবারে তার সাথে মাদরাসার অপর শিক্ষার্থী শেখ আবু তায়েফ এর ঝগড়া বাঁধে। বিষয়টি আমাকে জানানো হলে আমি ছাব্বিরকে মাদরাসায় ডেকে পাঠাই।’ তিনি বলেন, ‘মারামারির কথা শুনে আমি স্বাভাবিক অবস্থায় ছিলাম না, তাই শাসন করার চেষ্টা করেছি। এটা আসলেই মাত্রাতিরিক্ত হয়ে গিয়েছিল।’
এ ব্যাপারে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার (দায়িত্বপ্রাপ্ত) অফিসার ইনচার্জ দিলীপ কান্ত নাথ বিজয়ের কন্ঠকে জানান, থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে। এব্যপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মামুনুর রহমানও অবগত আছেন। ঘটনাটি তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by Yellow Host