ঢাকা ৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২:৩২ অপরাহ্ণ, জুলাই ২২, ২০১৯
গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি::::
নাম ফরিদ আহমদ ডাক নাম মন্টু। গোলাপগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকার ৪নং ওয়ার্ডের স্বরসতি গ্রামের মৃত ইশাদ আলীর পুত্র। তিনি দীর্ঘ দিন থেকে গোলাপগঞ্জ বাজারের ওলিউর রহমান মৎস্য আড়তে হিসাব রক্ষকের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন । যখনি কাজের একটু ফাঁক পান তখনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে গান লেখা শুরু করে দেন। গতকাল শনিবার কথা হয় বঙ্গবন্ধু পাগল ফরিদ আহমদের সাথে। কত বছর ধরে বঙ্গবন্ধু ও শেখ পরিবার নিয়ে গান লিখছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ফরিদ আহমদ বলেন, আমার বয়স যখন ৮বছর তখন আমি আমার প্রাণ প্রিয় বাবার কাছে শুনেছি কিভাবে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের এদেশের কিছু বেঈমান হত্যা করেছিল। সে দিন আমিও আমার বাবার বর্ণনা শুনে কেঁদেছিলাম। সেই থেকেই আমার চিন্তা চেতনায় বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের মানুষকে লালন কওে যাচ্ছি। সেই সাথে দেশপ্রেমের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে বিভিন্ন জাতীয় দিবস নিয়ে গান লিখে যাচ্ছেন বলেও জানান তিনি। আগামী মাসে বঙ্গবন্ধু কে নিয়ে ছয়টি গান রেকর্ড হচ্ছে। গোলাপগঞ্জের জনপ্রিয় কণ্ঠ শিল্পী মুক্তা মাহমুদ ও আনজুমান চৌধুরী কন্ঠে বাজারে এ্যালবাম আসছে।
কবে থেকে বা কিভাবে গান লিখা শুরু করেছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ফরিদ আহমদ বলেন, আমার বয়স যখন ১২ বছর তখন আমাদের এলাকায় একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করলে আমি সেখানে যাই। সেই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের হর্তকর্তা ছিলেন বোন জামাই। সেখানে গিয়ে আমি আমার বোনের স্বামীর সাথে কথা বলতে চাইলে সেখানের দয়িত্বে থাকা এক কর্মী আমায় থাপ্পড় মেরে অপমাণ করে। এর পর আমি কাঁদতে কাঁদতে বাড়িতে চলে আসলাম। তখন থেকেই প্রতিজ্ঞা করলাম আমি যতদিন পর্যন্ত নিজে গান লিখে গাইতে না পারবো ততদিন পর্যন্ত আমার বোনের স্বামীকে মুখ দেখাবোনা।
বঙ্গবন্ধু, শেখ পরিবার ও দেশাত্মবোধক প্রায় ৪ শতাধিক গান লেখার পরও কেন এখন পর্যন্ত কোন বই বের করতে পারেননি? এমন প্রশ্নে অশ্রুসিক্ত চোখে জানান, আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে এখনো বই বের করা সম্ভব হয়নি। অনেক বিত্তবানদের ধারে ধারে ঘুরেছি। অনেক নেতার দোয়ারে গিয়ে ধরনা দিয়েছি কিন্তু শুধুই আশ্বাসের বাণীই শুনেছি তাদের কাছ থেকে। শেষ পর্যন্ত বিয়ানীবাজারের কৃতি সন্তান কানাডা আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সরওয়ার হোসেন আশ্বাস দিয়েছেন আমার লেখা গান দিয়ে একটি বই বের করে দিবেন। উনার আশ্বাসের পর আমি কিছুটা আশার আলো দেখতে পাচ্ছি।
কতদিন পর্যন্ত গান লিখে যাবেন এমন প্রশ্নে ফরিদ আহমদ বলেন, যতদিন আমার দেহে প্রাণ আছে আমি আজীবন বঙ্গবন্ধু ও দেশকে নিয়ে গান লিখে যাবো।
ফরিদ আহমদ বলেন, আমার জীবনের একটা ইচ্ছা আছে। আমি যেন একটি বার শেখ পরিবারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা কওে এই মহান নেত্রীর সামনে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা একটি গান যেন গাইতে পারি। এতেই আমার জীবন ধন্য হবে। স্বার্থক হবে জন্ম আমার।
ফরিদ আহমদ দীর্ঘ দিন ধরে এ পর্যন্ত প্রায় এক শতাধিক গান বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লিখেছেন। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে প্রায় অর্ধ শতাধিক গান লিখেছেন। প্রতিটি জাতীয় দিবস নিয়েও লেখা আছে তার অনেক গান। ১৯৯৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট অর্গনাইজেশন সঙ্গীত প্রতিযোগীতায় নিজের তৈরী গান গেয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেন। এছাড়াও গত বছর সিলেট অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ‘ঘ’ বিভাগ থেকে ফরিদ আহমদের লেখা গান গেয়ে প্রথম স্থান অধিকার করে মঙ্গলা রানী নাথ নামের এক প্রতিযোগী। ফরিদ আহমদের মতই অনেক প্রতিভা আজ সাংস্কৃতিক জগৎ থেকে অযতেœ অবহেলায় হারিয়ে যাচ্ছে। তাঁর জীবনের শেষ ইচ্ছা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে একটি বার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে তার লেখা একটি গান গেয়ে শুনাবেন।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by Yellow Host